গৌরবের পদ্মাসেতু উদ্বোধনের এক মাস আজ। গত ২৫ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন (২৬ জুন) থেকেই সব ধরনের যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়ু পদ্মাসেতু। এই এক মাসে ৭৬ কোটি টাকার বেশি টোল আদায় হয়েছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, ২৬ জুন থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত পদ্মাসেতুতে ৭৬ কোটি ১৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা টোল আদায় করা হয়েছে। এই সময়ে সেতু পারাপার হয়েছে ৫ লাখ ৭০ হাজার ৪২০টি যানবাহন।
টোলের টাকা কোন কাজে ব্যবহার করা হবে?
সরকারের করা সম্ভাব্যতা জরিপে বলা হয়েছে, পদ্মাসেতু নির্মাণের ফলে দেশের জিডিপি ১ দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। সেতু থেকে হওয়া আয় এবং সেতুকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ এবং দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২০টির বেশি জেলায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে অর্থনীতিতে এই পরিবর্তন ঘটবে। এর মধ্যে টোলের টাকা দিয়ে সেতুর নির্মাণ ব্যয় এবং রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা হবে।
পদ্মাসেতুর প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, টোল থেকে আসা অর্থ ব্যয়ের খাত নির্দিষ্ট করা আছে। এর মধ্যে ঋণ পরিশোধ, রক্ষণাবেক্ষণ, আদায়কৃত আয়ের ওপর মূল্য সংযোজন কর, টোল আদায়কারীর খরচসহ খাতগুলোতে নিয়মিত অর্থ পরিশোধ করতে হবে কর্তৃপক্ষকে। এ নিয়মের কোনো ব্যত্যয় হবে না। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী তাদের কাছ থেকে পাওয়া ঋণ এক শতাংশ সুদসহ পরিশোধ করা হবে। এ ঋণ তিন মাস পর পর মোট ১৩৬টি কিস্তিতে পরিশোধ করা হবে।
তিনি আরো বলেন, পদ্মাসেতুর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ৫ বছরে ৬০০ কোটি টাকার বেশি পরিশোধ করতে হবে তাদের। রক্ষণাবেক্ষণের চার্জ বাৎসরিক ভিত্তিতে প্রদান করা হবে। রক্ষণাবেক্ষণের পেছনে আয়ের ৭ শতাংশের বেশি ব্যয় হবে। এছাড়া প্রতি ১০ বছর পর পর সেতুতে মেরামতের দরকার হতে পারে, এমন ধারণা থেকে একটি অর্থ নির্দিষ্ট করে গচ্ছিত রাখা হবে। আদায় করা টোলের ১৫ শতাংশ হারে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট হিসেবে যাবে সরকারি কোষাগারে। সব খরচ মেটানোর পর উদ্ধৃত্ত অর্থ জমা থাকবে সেতু কর্তৃপক্ষের কাছে। যার ওপর আয়কর দিতে হবে কর্তৃপক্ষকে।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, এক মাসে পদ্মাসেতু থেকে আদায় হওয়া টোলে কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট। এ আয়ের পরিমাণ আস্তে আস্তে আরো বৃদ্ধি পাবে। কারণ প্রতিদিন সেতুতে যানবাহন বাড়ছে। পদ্মাসেতু থেকে আয়ের যে সরকারি পূর্বাভাস, তাতে বলা হয়েছিল যানবাহন চলাচল করলে সেতু থেকে প্রথম বছর আয় হবে ১ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা। আশা করি, এভাবে চলতে থাকলে নির্ধারিত সময়সীমার আগেই পদ্মাসেতুর নির্মাণ ব্যয় তুলে আনা সম্ভব হবে।